Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
লক্ষ্য পূরণের ফলনে খুশি নাটোরের রসুন চাষি
বিস্তারিত

https://bangla.bdnews24.com/samagrabangladesh/ggdlptwu6s

লক্ষ্য পূরণের ফলনে খুশি নাটোরের রসুন চাষি

‘সাদা সোনা’ খ্যাত রসুনের সাথি ফসল তরমুজ ও বাঙ্গিতে বাড়তি আয়ের স্বপ্নও বুনছেন চাষিরা।

তারিকুল হাসাননাটোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

Published : 25 March 2023, 09:27 AM


রসুন ফলনে লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ পূরণ হওয়ায় নাটোরের চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। তারা এখন রসুন তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাজারে দাম স্থিতিশীল থাকলে এবার ভালো লাভের আশাই করছেন।

রসুনের পাশাপাশি সাথি ফসল হিসেবে করা তরমুজ ও বাঙ্গিতে বাড়তি আয়ের স্বপ্নও বুনছেন কেউ কেউ।

জেলার বনপাড়া-হাটিকুমরুল সড়কের দুপাশে নয়াবাজার থেকে বড়াইগ্রামের রয়না তেল পাম্প পর্যন্ত ঘুরে ক্ষেত থেকে রসুন তোলায় চাষিদের কর্মব্যস্ততা চোখে পড়ে।

সরেজমিনে গুরুদাসপুর থেকে নয়াবাজার সড়কের পাশে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে রসুন বাছাই, বাঁধাই ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে।

জমি থেকে রসুন তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন এক নারী।

নাটোর জেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, জেলার সাতটি উপজেলায় সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে ইটালি, ঢাকাইয়া, বারি ১, বারি ২ ও পাটনাই জাতের রসুন। এ বছর ১৬ হাজার ৭৪৫ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে, যার সিংহভাগই চাষ হয়েছে গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলায় – যথাক্রমে ৪ হাজার ৫৫০ এবং ৬ হাজার ৬৫০ হেক্টর।

নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ সহাকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হামিদুর রহমান বলেন, “নাটোরে রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ পূরণ করেছে। প্রতি বিঘায় ২৮ থেকে ৩০ মণ রসুন উৎপাদানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে।”

গুরুদাসপুর উপজেলার সিধুলী এলাকার রসুন চাষি মোশারফ হোসেন ৫ বিঘা জমিতে রসুনের সঙ্গে তরমুজ ও বাঙ্গি চাষ করেছেন।

তিনি বলেন, তার প্রতি বিঘায় ৩০ থেকে ৩৫ মণ হারে রসুন উৎপাদিত হয়েছে। বাজার ভালো থাকলে লাভ হবে। বাজার একটু কমলেও তরমুজ ও বাঙ্গিতে পুষিয়ে যাবে।

বিঘাপ্রতি খরচের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বীজ, কীটনাশক, সেচ, পরিচর্যা, শ্রমিক, জমির লিজসহ আনুষাঙ্গিক খরচ দিয়ে ৫০ থেকে ৫২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তরমুজ ও বাঙ্গিতে বিঘাপ্রতি ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বাজার ভালো থাকলে রসুন, তরমুজ ও বাঙ্গিতে খরচ বাদে হাজার ত্রিশেক টাকা থাকবে।

যাদের নিজের জমি আছে তাদের লাভটা আরও বেশি হবে বলে তিনি জানান।

নয়াবাজার এলাকায় রসুনের ব্যবসা করেন মাসুদ পারভেজ মিলন।

বাজার পরিস্থিতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আকার, মান ও জাতভেদে এখন প্রতিমণ রসুনের দাম ১৬শ টাকা থেকে ২৮শ টাকা আছে। বাজারে খুচরা ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে রসুন।

স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে নাটোরের রসুন ঢাকা-ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে বলে জানান মিলন।

গুরুদাসপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. মতিয়ার রহমান জানান, গত বছর ভালো দাম না পাওয়ায় এ বছর উপজেলার ১ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ কম হয়েছে। বাজার ভালো থাকায় সে জায়গা দখল করে নিয়েছে ভুট্টা ও সরিষা।

“তবে এ বছর রসুনের উৎপাদন খুব ভালো হয়েছে; দামও ভালো আছে। তাছাড়া সাথি ফসল হিসেবে তরমুজ ও বাঙ্গিতে বাড়তি আয় হবে কৃষকদের।” 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রসুন তোলার সময় নাটোরে চাহিদা বাড়ে শ্রমিকের। এ সময়টাতে সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও বগুড়া থেকে অনেক শ্রমিক  আসেন গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রামে।

সিরাজগঞ্জের মান্নাননগর এলাকার থেকে আশরাফুল, সেলিম, মিজান, আব্বাসসহ ২০ জন কৃষিশ্রমিক এসেছেন রসুন তোলার কাজ করতে।

আব্বাস আলী বলেন, এলাকায় তেমন কাজ নেই, তাই সবাই মিলে রসুন তুলতে এসেছেন। সন্ধ্যায় বাড়ি চলে যাবেন। পাঁচশ টাকা করে পেয়েছেন।

নাটোরের সিংড়া উপজেলার কলম গ্রামের মিলন আহমেদ গুরুদাসপুরের নয়াবাজারে এসেছেন কাজের সন্ধানে।

তিনি বলেন, একদিনে সাড়ে চারশ টাকায় রসুন তোলা, বাঁধা ও বহনের কাজ করেছেন। সকালে ও দুপুরের খাওয়া জমির মালিকের।

নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, “এবার নাটোরে রসুনের বাম্পার ফলন হয়েছে; বাজারে দামও ভালো আছে। রসুনের সাথি ফসল তরমুজ ও বাঙ্গিতে বাড়তি মুনাফা হবে কৃষকদের। রসুনের ভালো ফলন ও বাজারে ভালো দাম থাকায় নাটোরের কৃষকরাও খুশি।“

ছবি
ছবি
ডাউনলোড
প্রকাশের তারিখ
25/03/2023
আর্কাইভ তারিখ
25/04/2030